দূরের জিনিস দেখার জন্য সাধারনত টেলিস্কোপ ব্যবহার হয়। ইটালীর বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর হাত ধরে যাত্রা শুরু হয়েছিল টেলিস্কোপের। গ্যালিলিও টেলিস্কোপের সাহায্যে বিভিন্ন গ্রহের পরিভ্রমণ পথ পরীক্ষা করে ঘোষণা দিয়েছিলেন সূর্য নয়, পৃথিবীই সূর্যের চারদিকে ঘোরে। বর্তমানে আধুনিক অনেক টেলিস্কোপ তৈরি হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এখন টেলিস্কোপের নতুন যুগে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন।
অবাক করার মতো বেপার হলো পৃথিবীর রহস্য উদঘাটনে তৈরি হবে সুপার টেলিস্কোপ। বিশ্বের খ্যাতিমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস করপোরেশন (আইবিএম) নেদারল্যান্ডসের ইনস্টিটিউট ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোনমির (অ্যাসট্রন) সাথে যৌথভাবে এক রেডিও টেলিস্কোপ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। এ টেলিস্কোপ সুপার কম্পিউটারেরমাধ্যমে পরিচালিত হবে। এ টেলিস্কোপ ও সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে মহাশূন্যের অজানা তথ্য ও পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে। নতুন এ সুপার কম্পিউটার খুব স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যয়ে ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে দুর্বল রেডিও সিগন্যাল বিশ্লেষণ করা সম্ভব হবে। প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি বছর আগে মহাশূন্য তৈরির সময় যে বিগব্যাং হয়েছিল, তা থেকে বিচ্ছুরিত দুর্বল আলোক রশ্মিগুলো এ সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হবে।
নতুন এ রেডিও টেলিস্কোপের নাম স্কয়ার কিলোমিটার অ্যারে টেলিস্কোপ। নতুন এ সুপার টেলিস্কোপ তৈরির কাজ ২০১৭ সালে শুরু হবে। এ টেলিস্কোপটি অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকায় স্থাপন করা হতে পারে। ২০২৪ সাল নাগাদ এটি তৈরির কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে এর নির্মাতা কর্তৃপক্ষ। সৌরজগতের চারপাশের তথ্য, অন্ধকারাচ্ছন্ন বিষয় এমনকি বিশ্ব তৈরির রহস্যও এর মাধ্যমে জানা যাবে।
প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে ৩০০০ এর বেশি এন্টেনা সহকারে Square Kilometre Array (SKA) অত্যন্ত সংবেদনশীল টেলিস্কোপ স্থাপন করেছে যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হবে। মহাশূণ্য গবেষণা কাজে অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে এই তিন হাজার এন্টেনা কাজ করবে নিয়মিতভাবে। এরা  একসাথে নয় মিলিয়ন সিগন্যাল প্রেরণ করতে পারে এবং  প্রতি মিনিটে ১৬০ গিগাবাইট এমপি৩ হিসেবে তথ্য জমা রাখবে। নতুন এ টেলিস্কোপে সংযুক্ত সুপার কম্পিউটার বর্তমানের বেশ কয়েক লাখ সুপার কম্পিউটারের সমপরিমাণ শক্তিশালী হবে। প্রতিদিন এ টেলিস্কোপে সংযুক্ত সুপার কম্পিউটার দৈনিক ১ এক্সাবাইট (১০ লাখ টেরাবাইট) তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারবে। এ প্রকল্পের বিষয়ে আইবিএমের প্রধান গবেষক রোনাল্ড লুজটেন জানিয়েছেন, ‘অতীতের বিষয় জানতে আমরা ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি উন্নতি করার চেষ্টা করছি। এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ব্যয়ের বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় রাখছি। কারণ অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎসাশ্রয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।এ টেলিস্কোপ তৈরিতে ১৫০ কোটি ইউরো ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে আইবিএম।
Categories:

0 comments:

Post a Comment

Subscribe to RSS Feed Follow me on Twitter!