Nokia এর ৪১ মেগাপিক্সলস এর বিস্ময়কর মোবাইল স্মার্ট ফোন এবারের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস মেলায় সবাই যখন অ্যানড্রয়েড নির্ভর মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিল তখন চুপি চুপি সকলের অগোচরে নীরবে নোকিয়া এমন এক চমক দেখিয়েছে তার ধকল এখনো কেউ কাটিয়ে উঠতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটি তাদের মোবাইলে উইন্ডোজ ফোন অ্যাপ দেবার সিদ্ধান্ত নেবার পর থেকেই নানা রকম সমস্যায় ভুগছে। বিশেষ করে মোবাইল প্রেমী মানুষ তাদের ব্যাপারে আগ্রহ একদমই হারিয়ে ফেলেছে। মোবাইল বাজারে নোকিয়ার কোন স্থান নেই, এই ধারণা যখন সকলের মনে, ঠিক তখনি বিশাল এক চমক দিয়ে সকলকে ধরাশায়ী করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এক ইউরো মুদ্রার পাশে রাখা সমআকারের সবচেয়ে বড় সেন্সরটিই নোকিয়ার বিখ্যাত ৪১ মেগাপিক্সেল সেন্সর মোবাইল পাগল মানুষেরা এইচটিসি, এলজি, হুয়াওয়ে এবং জেটিই যে স্মার্টফোনগুলো নিয়ে এই মেলায় হাজির হয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে অনেকদিন আগে থেকেই তারা নানা রকম কথা শুনে এসেছে। কিন্তু নোকিয়ার নতুন এই স্মার্টফোন সম্পর্কে কোন ধারণাই তাদের ছিল না। নোকিয়া যে তার এন এইটের নতুন একটি সংস্করণ বের করতে চলেছে সে সম্পর্কে গুজব শোনা গেলেও যেহেতু আগ্রহ কম সেহেতু কেউ জানতেও চেষ্টা করেনি আসলেই প্রতিষ্ঠানটির থলেতে কি রয়েছে।

যারা একবার দু'বার এ ব্যাপারে চিন্তা করেছে তারা ধরে নিয়েছে অন্য সকলের মতো ১০, ১২ অথবা খুব বেশি হলে ১৬ মেগা পিক্সেল হবে। অথবা থাকবে সফটওয়্যার কেন্দ্রিক কোন বিশেষ সুবিধা। কিন্তু যেই মুহূর্তে নোকিয়া বলে উঠলো ৪১ মেগাপিক্সেল, মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে সৃষ্টি হয়েছিল বিস্ময়ের এক বিরল মুহূর্ত। অনেকেই তো ধরে নিয়েছিল ব্যাপারটা তারা ভুল শুনেছেন। না ভুল তারা কেউ শোনে নি। নোকিয়া আবারো প্রমাণ করে দিয়েছে মোবাইল হার্ডওয়্যার নির্মাতা হিসেবে তারা এখনো অন্যতম শীর্ষস্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। কিভাবে কাজ করছে প্রযুক্তিটি?- এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সবাই ব্যাপারটা জানতে এবং বুঝতে চায়। নোকিয়া তাদের ক্যামেরায় বিশ্বের বিখ্যাত লেন্স নির্মাতা কার্ল জেইস এর টেসার অপ্টিক্যাল ডিজাইনের সাথে ব্যবহার করেছে নতুন এই ৪১ মেগাপিক্সেল সেন্সর। অনেকে প্রথমে ভেবেছিল নোকিয়া কোন সফটওয়্যার কারসাজির মাধ্যমে পিক্সেল রেট বাড়িয়ে দিয়েছে।

কিন্তু ঘটনা সেটা নয়, বরং তারা ১/১.২" সেন্সর ব্যবহার করে সত্যিকারের ৪১ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা তৈরি করেছে। হ্যাঁ এখানে সফটওয়্যারের একটা ভূমিকা অবশ্য রয়েছে, কিন্তু সেটা থাকছে ঠিক উল্টোটি করার জন্য। সফটওয়্যারটি পিক্সেল বাড়ানোর বদলে কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করছে! ব্যাপারটা ঘটছে এভাবে, ধরুন আপনি একটা ছবি তুললেন, ৪১ মেগাপিক্সেল মানে কিন্তু ছবির আকার হবে বিশাল (৭৭০০x৫৫০০), এখন পিউর ভিউ সফটওয়্যারটি এই পিক্সেলের মাঝ থেকে সবচেয়ে ভালো বা পরিষ্কার পিক্সেলগুলো নির্বাচন করবে ফলে ছবিটির আকার শেষ পর্যন্ত ৩২০০x১২০০ রেজ্যুলেশনে এসে দাঁড়াবে কিন্তু ছবিটির প্রতিটি পিক্সেল হবে পরিষ্কার ফলে ছবি হবে ঝকঝকে।

৪১ মেগাপিক্সেলের সেন্সর থাকায় ছবির মানের ক্ষতি না করেও থ্রি এক্স পর্যন্ত জ্যুম করা সম্ভব হবে বলে জানা গিয়েছে। একই ধরণের জ্যুম যদি আপনি ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরায় করতে যান তাহলে অপরিষ্কার এবং পিক্সালেরেটেড ছবি পাবেন। ক্যামেরা প্রযুক্তি নিয়ে যাদের ধারণা আছে তারা সকলেই বলেছে নোকিয়ার এই ১/১.২" আকারের সেন্সরটি বর্তমানে নিকনের ৯০০ ডলার মূল্যের নিকন ওয়ানের সমতুল্য। স্মার্টফোনটির কথা ঘোষণা দেবার সাথে সাথে এনগ্যাজেট যে প্রতিবেদন করেছে তার মন্তব্য পেজে বিশাল তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। সেখানে দেখা গিয়েছে যারাই ফোনটি হাতে নিয়ে দেখেছে এবং আসল ছবিগুলো দেখতে পেরেছে তারা একবাক্যে বলেছে, যে কোন মোবাইল ফোন অথবা যে কোন পয়েন্ট শ্যুট ক্যামেরার চাইতে এই স্মার্টফোনের তোলা ছবির মান ভালো। এমন কি অনেকেই বলেছে আইফোন ফোর এস (স্মার্টফোনগুলোর মাঝে সবচেয়ে ভালো ছবি তুলতে পারে এই ফোনটি) এ তোলা ছবি এর ধারের কাছে পৌঁছুবেনা।
Categories:

0 comments:

Post a Comment

Subscribe to RSS Feed Follow me on Twitter!