বিশ্ব বাজারে নতুন বেতার প্রযুক্তি 'সুপার ওয়াই ফাই' আসছে। প্রাথমিকভাবে
আমেরিকায় এ প্রযুক্তি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এর প্রতি আগ্রহ
দেখিয়েছে ব্রাজিল ও ব্রিটেনসহ আরো অনেক দেশ। প্রথমে এ প্রযুক্তি ব্যবহার
করেছে টেক্সাসের হিউস্টনে অবস্থিত রাইস ইউনিভার্সিটি। এ বছর নর্থ
ক্যারোলিনার উইলমিংটনেও এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
অবশ্য, 'সুপার ওয়াই ফাই' বলা হলেও এ প্রযুক্তির সঙ্গে প্রচলিত 'ওয়াই
ফাই' প্রযুক্তি মিলের চেয়ে অমিলই বেশি । উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, 'ওয়াই ফাই'
প্রযুক্তিতে যে সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তার কোনটাই 'সুপার ওয়াই
ফাই'-এর ক্ষেত্রে কাজে লাগবে না।
'সুপার ওয়াই ফাই'-এর জন্য যে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয় তা একেবারেই
ভিন্ন। এ কারণেই যন্ত্রপাতিও বদলে যায়। তবে প্রচলিত 'ওয়াই ফাই'র মাধ্যমে যে
ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যায় তার সবই পাওয়া যাবে নতুন এ প্রযুক্তিতে।
সেইসঙ্গে আরো অনেক সুযোগ সুবিধাও সংযোজিত হবে 'সুপার ওয়াই ফাই'তে।
'সুপার ওয়াই ফাই' ব্যবহারে কি কি বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে সে কথায় একটু
পরে আসছি। তার আগে বলে নেই এ প্রযুক্তির নামকরণ হলো কিভাবে। ২০১০ সালে
মার্কিন ফেডারেল কম্যুনিকেশন কমিশন প্রথম এ নামটি চালু করে। বেতারে
ব্রডব্যান্ড সেবা দেয়ার জন্য টেলিভিশনের সম্প্রচারে ব্যবহৃত স্পেকট্রাম
ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার পর এ নামটি চালু করা হয়। 'হোয়াইট স্পেস' নামে
পরিচিত এই স্পেকট্রাম টেলিভিশনে সম্প্রচারের জন্য বরাদ্দ থাকলেও তা ব্যবহৃত
হয়নি।
নতুন এই স্পেকট্রাম ব্যবহারের সুবিধার কথা তুলে ধরেন নিউ আমেরিকা
ফাউন্ডেশনের অয়্যারলেস ফিউচার প্রজেক্ট-এর পরিচালক মাইকেল ক্যালব্রিজ। তিনি
বলেন, ওয়াই ফাই ব্যবহার দ্রুত গতিতে বাড়ছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত
ফ্রিকোয়েন্সি সীমিত থাকায় এ ক্ষেত্রে সংকট দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া, ওয়াই ফাই
কয়েকশ' মিটারের বাইরে আর কাজ করে না। এ অবস্থায় কথিত 'হোয়াইট স্পেস'কে ওয়াই
ফাই-এর কাজে ব্যবহারের জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি।
ওয়াই ফাই যা পারে না তা পারে 'সুপার ওয়াই ফাই'। যেমন, অল্প শক্তি
ব্যবহার করে অনেক দূর পর্যন্ত এ ফ্রিকোয়েন্সি যেতে পারে; যাত্রা পথে
দালান-কোঠা, গাছ-পালা বা খারাপ আবহাওয়া 'সুপার ওয়াই ফাই'-এর জন্য কোনো
সমস্যা হয়ে দেখা দেয় না। সম্প্রচারের কাজে ব্যবহৃত স্পেকট্রাম ব্যবহারের
কারণে 'সুপার ওয়াই ফাই' ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। তবে বাস্তব
ক্ষেত্রে 'সুপার ওয়াই ফাই'কে অত দূরের পথ পাড়ি দেয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
এ ছাড়া, ব্রডব্যান্ড নেই এমন দূরবর্তী এলাকাগুলোতে এ দিয়ে দ্রুত গতি
সম্পন্ন ইন্টারনেটের সেবা দেয়া যাবে। নতুন এ প্রযুক্তি মোবাইল ফোন
কোম্পানিগুলোকে হাঁফ ছাড়ার সুযোগ করে দেবে।
0 comments:
Post a Comment